মাত্র ছয় মাস আগে ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনার (এসি) প্রস্তুতকারকদের ওপর কর্পোরেট কর দ্বিগুণ করার পর এবার তাদের পণ্যে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার। এর ফলে এবারের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে এসি-ফ্রিজের দাম বাড়বে, যা সাধারণ ভোক্তাদের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করবে।
সোমবার বিকেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, বর্তমানে ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনার উৎপাদনে ৭.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপিত রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই হার ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এতে দেশীয় উৎপাদনকারীদের খরচ বাড়বে এবং বাজারে এই পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেট আকারে হ্রাসের ঘটনা।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ ও সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।
এবারের বাজেটে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং অবকাঠামো উন্নয়নে। একইসঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে।
প্রচলিতভাবে বাজেট উপস্থাপন করা হতো জুনের প্রথম বৃহস্পতিবার। তবে এবার জুনের প্রথম বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজই বাজেট পেশ করা হচ্ছে। বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে, যেখানে সাংবাদিকরা সরাসরি প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন।
এবার সংসদ না থাকায় বাজেট নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিতর্ক হবে না। তবে জনমতের ভিত্তিতে বাজেটের চূড়ান্ত রূপ নির্ধারণ করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত নেবে এবং সেগুলো বিশ্লেষণ করে বাজেটে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনবে।
খুলনা গেজেট/এমএম